ঢাকা, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫

৪ আষাঢ় ১৪৩২, ২১ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

ইরান-ইসরায়েল: আক্রমণে দুই দেশই দুর্বল হয়ে পড়ছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬:১৯, ১৮ জুন ২০২৫

ইরান-ইসরায়েল: আক্রমণে দুই দেশই দুর্বল হয়ে পড়ছে

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার চলমান সংঘাতে পাল্টাপাল্টি হামলার চিত্র বিশ্লেষণ করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিরক্ষা গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্রিটিক্যাল থ্রেটস প্রজেক্ট (সিটিপি) ও ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার (আইএসডব্লিউ) জানিয়েছে—ইরানের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।

প্রতিষ্ঠান দুটি জানায়, ১৩ জুন থেকে শুরু হওয়া সংঘাতে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনী ইরানে ১৯৭টি বিমান হামলা চালিয়েছে। অন্যদিকে, ইরান থেকে ইসরায়েলে চালানো ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সংখ্যা মাত্র ৩৯টি।

হামলার সক্ষমতায় এগিয়ে ইসরায়েল, তবে ক্ষয়িষ্ণু প্রতিরক্ষা

সিটিপি-আইএসডব্লিউ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে ইরানের হামলার পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে এসেছে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ইসরায়েলের টার্গেট করা ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্র ও অস্ত্র সংরক্ষণাগার ধ্বংস হওয়াই এর প্রধান কারণ।

তবে একে একতরফা সুবিধা হিসেবে দেখার সুযোগ নেই। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ইসরায়েলি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ছে। ইরানের দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে ব্যবহৃত ইসরায়েলের অ্যারো ইন্টারসেপ্টর সিস্টেমে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ফলে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ওপর চাপ বেড়েছে।

৩০ ক্ষেপণাস্ত্রের একযোগে হামলা, ক্ষতিগ্রস্ত হার্জলিয়া এলাকা

গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলে ৯টি হামলা রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ছিল মঙ্গলবার ভোররাতের হামলা, যেখানে প্রায় ৩০টি ক্ষেপণাস্ত্র একযোগে নিক্ষেপ করে ইরান। ইসরায়েলি বাহিনী জানায়, অধিকাংশ ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করা হলেও কিছু ধ্বংসাবশেষ আঘাত হানে উপকূলীয় শহর হার্জলিয়ায়, যেখানে সামরিক ঘাঁটি বা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা থাকতে পারে বলে মনে করছে ইরান।

ক্ষেপণাস্ত্র হামলা কমলেও প্রাণহানি অব্যাহত

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর তথ্যমতে, তারা ইরানের প্রায় ২০০ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ স্থাপনা ধ্বংস করেছে। এতে ইরানের হামলার সক্ষমতা সীমিত হয়ে পড়ছে।

পরিসংখ্যান বলছে, শনিবার রাত থেকে রোববার পর্যন্ত ইরান ২০০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল। পরদিন সে সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৬৫টিতে, আর সোমবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত তা আরও কমে হয় ৩০টির মতো। তবে আংশিক হামলা সত্ত্বেও হতাহতের ঘটনা ঘটছে। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া হামলায় ইসরায়েলের ২৪ জন নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কতা ও সহায়তা

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় অ্যারো ইন্টারসেপ্টরের ঘাটতির বিষয়টি আগে থেকেই ওয়াশিংটনের জানা ছিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে ইসরায়েলের আকাশ, সমুদ্র ও স্থল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে পদক্ষেপ নিচ্ছে। তবে এ বিষয়ে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

ঢাকা এক্সপ্রেস/ এমআরএইচ

আরও পড়ুন