শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৭:২৪, ২৩ জুন ২০২৫
দলীয় সূত্র জানিয়েছে, বেগম জিয়াকে এবার বগুড়া, ফেনী ও দিনাজপুর—এই তিনটি আসনে প্রার্থী করার চিন্তাভাবনা চলছে। এর মধ্যে বগুড়া-৬ ও বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাহজাহানপুর) আসন দুটি সবচেয়ে গুরুত্ব পাচ্ছে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জন্মভূমি হওয়ায় বগুড়া-৭ বিএনপির কাছে দীর্ঘদিন ধরেই প্রতীকী মর্যাদার।
দলীয় এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “বগুড়া শুধু একটি আসন নয়, এটি বিএনপির রাজনৈতিক প্রাণকেন্দ্র। ম্যাডাম জিয়া এখান থেকেই গণমানুষের বার্তা দিতে চান।” তিনি আরও বলেন, “বিভক্ত দল আবার ঐক্যবদ্ধ হবে তার অংশগ্রহণে, সেই প্রত্যাশাই রাখছে সকলে।”
২০০৮ সালের পরে ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনটি আসনে মনোনয়ন জমা দিলেও দুর্নীতির মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ায় তার প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছিল। তবে ২০২৪ সালে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর আদালতের রায়ে তার বিরুদ্ধে থাকা সব মামলা খারিজ হয়ে যায়। সুপ্রিম কোর্ট দুটি মামলায় খালাস দেওয়ায় নির্বাচনে অংশ নিতে আর কোনো আইনগত বাধা নেই।
বগুড়া জেলা বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা বলেন, ‘খালেদা জিয়ার বগুড়া থেকে নির্বাচন করার ইচ্ছাই একটি রাজনৈতিক বার্তা। এটি কেবল একটি প্রার্থিতা নয়, বরং একটি প্রত্যাবর্তনের ঘোষণা। এতে নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আশার সঞ্চার হবে।’
তিনি আরও জানান, “ম্যাডাম জিয়া এখন দেশে ফিরেছেন, শারীরিকভাবে অনেকটাই ভালো আছেন। মনোবল অটুট। তিনি নির্বাচনে অংশ নেবেন এবং আবারও আমাদের নেতৃত্ব দেবেন—এ নিয়ে দলের ভেতরে ব্যাপক আশা।”
বেগম খালেদা জিয়া এর আগে ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাঁচটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রতিবারই সব আসনে জয়ী হন। তার প্রার্থিতা ছিল ঢাকা, বগুড়া, ফেনী, চট্টগ্রাম ও খুলনার মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে। ২০১৮ সালে তিনটি আসনে মনোনয়ন জমা দিলেও আইনি জটিলতায় অংশ নিতে পারেননি।
দলের একজন সাবেক সংসদ সদস্য বলেন, “বেগম জিয়ার অংশগ্রহণ মানেই মানুষের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার বার্তা। বগুড়া থেকে তার প্রার্থিতা বিএনপির আন্দোলন ও সংগঠনে নতুন গতি আনবে।”
দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বেগম জিয়ার মতোই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও একাধিক আসনে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন। ইতোমধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা তৈরি ও যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “বেগম জিয়া জনগণের আস্থার প্রতীক। তার নেতৃত্বেই দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে। তার প্রার্থিতা মানে হচ্ছে ভোটাধিকার ও ন্যায়ের বিজয়।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বেগম জিয়ার বগুড়া কেন্দ্রিক প্রত্যাবর্তন শুধু একটি প্রার্থিতা নয়, বরং তা বিএনপির পুনর্গঠনের সূচনার দিকেও ইঙ্গিত করে। এর মধ্য দিয়ে দেশের রাজনীতিতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে বলেও মত দিয়েছেন তারা।
ঢাকা এক্সপ্রেস/ এমআরএইচ