শিরোনাম
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০:৩০, ১৭ জুন ২০২৫
প্রথম দিন শেষে স্কোরবোর্ডে ৩ উইকেটে ২৯২ রান। এর পেছনে মূল কৃতিত্ব নাজমুলের ১৩৬* (২৬০ বল) ও মুশফিকের ১০৫* (১৮৬ বল) রানের ইনিংস। দুজনের ব্যাটিংয়ে ফুটে উঠেছে টেস্ট ক্রিকেটের ধৈর্য, শৃঙ্খলা আর শিল্প।
শুরুটা যদিও ভালো হয়নি বাংলাদেশের। মাত্র ৪৫ রানের মধ্যে সাজঘরে ফিরে যান ওপেনার এনামুল হক, সাদমান ইসলাম এবং মুমিনুল হক। তবে এরপর দৃঢ় হয়ে দাঁড়ান নাজমুল–মুশফিক। ধাপে ধাপে, ধৈর্যে আর কৌশলে তাঁরা ঘুচিয়েছেন প্রাথমিক বিপর্যয়। নাজমুল যেখানে খেলেছেন শটসজ্জায় ভরা একটি ইনিংস (১৪টি চার ও একটি ছক্কা), মুশফিক ছিলেন আত্মস্থ, ইনিংস গড়েছেন ছোট ছোট দৌড়ে।
সেঞ্চুরিতে পৌঁছাতে যেখানে নাজমুল খেলেছেন ২০২ বল, সেখানে মুশফিক করেছেন ১৭৬ বলে। কিন্তু দুইজনের ব্যাট থেকেই উঠে এসেছে একইরকম স্বস্তি ও আত্মবিশ্বাস।
সকালের প্রথম সেশনেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। অফ স্টাম্পের বাইরের বল ছেড়ে দিয়ে স্লিপে ধরা পড়েন এনামুল। এরপর অভিষিক্ত থারিন্দু রত্নায়েকের ঘূর্ণিতে হারায় সাদমান ও মুমিনুল। একসময় মনে হচ্ছিল, প্রথম দিনই হয়তো ব্যাকফুটে চলে যাবে সফরকারীরা।
কিন্তু উইকেটে গিয়ে শান্ত–মুশফিক সেই ধারণা উল্টে দেন। দ্বিতীয় সেশনজুড়ে একটিও উইকেট না হারিয়ে তুলেছেন ৯২ রান। শেষ সেশনে যোগ করেছেন আরও ১১০ রান। দিনের তিন ভাগে ব্যাট করেছেন কেবল দুজনই, যা আধিপত্যেরই এক নামান্তর।
গল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেট বরাবরই স্পিনবান্ধব। তবে প্রথম দুই দিন ব্যাটারদের জন্য সহায়ক। তার ওপর আজ আবহাওয়াও ছিল রোদেলা, বৃষ্টি থাকলেও তা ম্যাচে কোনো প্রভাব ফেলেনি। টেস্টের চিরাচরিত নাটকীয়তা থাকলেও আজ বাংলাদেশ যেন খেলেছে দৃঢ়তার পাঠ।
এই মাঠেই ২০১৩ সালে ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন মুশফিক, এবারও গড়ছেন স্মরণীয় ইনিংস। আর শান্ত তার নেতৃত্বের দায়িত্ব যেন কাঁধে নিয়ে উঠে দাঁড়িয়েছেন একজন পরিণত ব্যাটসম্যান হিসেবে।
এখন নজর দ্বিতীয় দিনের দিকে। শান্ত–মুশফিক জুটি কতদূর টানতে পারে, সেটাই নির্ধারণ করবে প্রথম ইনিংস কতটা শক্ত ভিত পাবে। আবার ২০১৩ সালের সেই ৬৩৮ রানের ইনিংসের পুনরাবৃত্তি সম্ভব কি না, সেটাও অনেকটা নির্ভর করছে তাঁদের হাতেই।
গলের বাতাস, উইকেট আর স্মৃতি—সব মিলিয়ে আজকের দিন ছিল বাংলাদেশের। এখন দেখা, কালকেও কি তাঁরা ধরে রাখতে পারবেন সেই ছন্দ?
ঢাকা এক্সপ্রেস/ এমআরএইচ