শিরোনাম
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯:২৮, ৩০ এপ্রিল ২০২৫ | আপডেট: ১০:৩০, ৩০ এপ্রিল ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
এর আগে সোমবার (২৮এপ্রিল) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশটির প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক জরুরি বৈঠক করেন। সেই বৈঠকের পরপরই আতাউল্লাহ তারার সংবাদ সম্মেলন করে ভারতের সম্ভাব্য পদক্ষেপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
আতাউল্লাহ তারার বলেন, ‘নির্ভরযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, পেহেলগাম হামলার জন্য পাকিস্তানকে ভিত্তিহীনভাবে দায়ী করে ভারত আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে সামরিক হামলা চালাতে পারে।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন ইস্যুতে ভারত প্রায়শই ‘স্বঘোষিত বিচারক, জুরি ও শাস্তিদাতা’র ভূমিকা নেয়, যা তিনি ‘বেপরোয়া আচরণ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান ভারতের এই একতরফা ও আগ্রাসী অবস্থান দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে।’
সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের অবস্থান পরিষ্কার করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পাকিস্তান নিজেও দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসবাদের শিকার। তাই আমরা এই অভিশাপের ভয়াবহতা ভালোভাবে বুঝি এবং বিশ্বের যেকোনো জায়গায় সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানাই।’
তিনি জানান, যদি নিরপেক্ষ কোনো আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়, তবে পাকিস্তান একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে সেই তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত। তবে তার দুঃখ, ‘ভারত এমন এক পথ বেছে নিয়েছে, যা সংঘাত ও অস্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে এবং এই পথ শেষমেশ গোটা উপমহাদেশের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।’
আতাউল্লাহ ভারতের বিরুদ্ধে ‘জনগণের আবেগকে রাজনৈতিকভাবে কাজে লাগানোর’ অভিযোগ এনে বলেন, ‘ভারত ইচ্ছাকৃতভাবে জনগণের আবেগকে উসকে দিচ্ছে এবং এই আবেগ থেকেই সামরিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। এটি দুর্ভাগ্যজনক।’
পাকিস্তান যে কোনো ভারতীয় আগ্রাসনের উপযুক্ত জবাব দেবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘যদি পরিস্থিতির অবনতি ঘটে, তবে তার সম্পূর্ণ দায়ভার ভারতের ওপর বর্তাবে।’
গত ২২ এপ্রিল (মঙ্গলবার) বিকেলে ভারতের জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগাঁও জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে পর্যটকদের ওপর হামলা চালায় কাশ্মিরভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই তৈয়বার উপশাখা ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’। স্বয়ংক্রিয় রাইফেলধারী সন্ত্রাসীরা নির্বিচারে গুলি চালিয়ে অন্তত ২৬ জন পুরুষ পর্যটককে হত্যা করে, আহত হয় আরও অনেকে।
এই হামলাকে ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর কাশ্মিরে সবচেয়ে প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত একাধিক কূটনৈতিক ও কৌশলগত পদক্ষেপ গ্রহণ করে, যার মধ্যে রয়েছে সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করা এবং সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা।
পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান ভারতের জন্য আকাশ ও স্থলসীমা সীমিত করার মতো পদক্ষেপ নেয়। একইসঙ্গে কাশ্মিরে হামলাকারীদের ধরতে ভারতীয় সেনাবাহিনী অভিযান শুরু করে এবং সীমান্তে দু’দেশের বাহিনীর মধ্যে গুলি বিনিময় শুরু হয়, যাতে প্রাণহানির খবরও পাওয়া গেছে।
ঢাকা এক্সপ্রেস/ বিডি