ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫

১৮ বৈশাখ ১৪৩২, ০৩ জ্বিলকদ ১৪৪৬

সীমান্তে উত্তেজনা চরমে

এবার ভারতের ভূখণ্ডে ঢুকে গুলি চালাল পাকিস্তানি সেনারা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০৯:৪৩, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

এবার ভারতের ভূখণ্ডে ঢুকে গুলি চালাল পাকিস্তানি সেনারা

ছবিঃ সংগৃহীত

ভারত অভিযোগ করেছে, পাকিস্তানি সেনারা আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম করে দেশটির ভূখণ্ডে প্রবেশ করে গুলি চালিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতেও সীমান্তে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে, যা চলমান উত্তেজনার ষষ্ঠ দিন পূর্ণ করল। এ বিষয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীরের পারগওয়াল সেক্টরে পাকিস্তান সেনারা আন্তর্জাতিক সীমানা লঙ্ঘন করে গুলি চালায়। তার আগের দিন লাইন অব কন্ট্রোল (এলওসি) বরাবর যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে টানা গুলিবর্ষণ চালানো হয়। মঙ্গলবার দিবাগত রাতেও নওশেরা, সুন্দরবনি এবং আখনূর সেক্টরে হালকা অস্ত্রের গুলির শব্দ শোনা যায়।

এই সংঘাত ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির পর যুদ্ধবিরতির সবচেয়ে বড় লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সংঘর্ষের সূত্রপাত ২২ এপ্রিল পেহেলগামে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর থেকেই। ওইদিন বাইসারান উপত্যকায় কাশ্মিরভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’-এর হামলায় অন্তত ২৬ জন পর্যটক নিহত হন।

পেহেলগাম হামলার জেরে ভারত একাধিক কূটনৈতিক এবং প্রতিরক্ষা-সংক্রান্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ১৯৬০ সালের সিন্ধু নদ পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করা, পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল, এবং আটারি-ওয়াঘা স্থলসীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া।

এই হামলার জন্য পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যবার একটি উপশাখাকে দায়ী করে ভারত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, এই বর্বর হামলায় জড়িত প্রত্যেক সন্ত্রাসী এবং তাদের মদতদাতাদের খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।

পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার ভারতের এসব অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন ও কল্পনাপ্রসূত’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেন, ‘ভারত একতরফাভাবে বিচারক, জুরি ও জল্লাদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। অথচ পাকিস্তান একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশনের প্রস্তাব দিয়েছে।’ তিনি আরও দাবি করেন, পাকিস্তানও সন্ত্রাসবাদের ভুক্তভোগী এবং সন্ত্রাস মোকাবেলায় আন্তরিক।

এই সংকটময় পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস উভয় দেশের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন। তিনি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলেন।

জাতিসংঘের বিবৃতিতে বলা হয়, মহাসচিব পেহেলগাম হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে আইনের আওতায় দোষীদের বিচার ও জবাবদিহির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। পাশাপাশি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং সম্ভাব্য সংঘাত এড়াতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেন।
 

ঢাকা এক্সপ্রেস/ বিডি

আরও পড়ুন