ঢাকা, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫

৪ আষাঢ় ১৪৩২, ২১ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

এসএসএফের পেশাদারিত্ব এবং আন্তরিকতা নিয়ে সন্তুষ্ট প্রধান উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক 

প্রকাশ: ১৪:০০, ১৮ জুন ২০২৫

এসএসএফের পেশাদারিত্ব এবং আন্তরিকতা নিয়ে সন্তুষ্ট প্রধান উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) সদস্যদের জনবিচ্ছিন্ন না হয়ে জনসংযোগ ও নিরাপত্তার মেলবন্ধনের মাধ্যমে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বুধবার (১৮ জুন) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত 'প্রধান উপদেষ্টার দরবার' অনুষ্ঠানের বক্তব্যে এ কথা বলেন।

এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টা স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের সদস্যদের সকল রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে উঠে নিরাপত্তার জন্য কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের প্রশিক্ষণ, অস্ত্র ও সরঞ্জাম আধুনিকায়নের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

ড. ইউনূস বলেন, বিশেষ করে, গত ৫ আগস্ট এই বাহিনীর কিছু যানবাহন ও সরঞ্জামের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল; যা অল্প সময়ের মধ্যেই কার্যক্ষম করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এসএসএফ একটি প্রশিক্ষিত ও সুশৃঙ্খল বাহিনী; যারা আমার ও রাষ্ট্রপতির সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। বিগত ১০ মাসে এসএসএফ দেশে বিদেশে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দক্ষতার সঙ্গে পালন করেছে। আমি এসএসএফ-এর সার্বিক পেশাদারিত্ব এবং আন্তরিকতা নিয়ে সন্তুষ্ট। এজন্য আমি সব সদস্যকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে আমাকে আমন্ত্রণ করার জন্য ধন্যবাদ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও এসএসএফ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছে। অন্যান্য বাহিনীর তুলনায় একটি ক্ষুদ্র বাহিনী, তবে এর কাজের গুরুত্ব এবং সংবেদনশীলতা অনেক বেশি। এই বাহিনী আমার নেতৃত্বে এবং তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়। 

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এসএসএফ বঙ্গভবনসহ আমার বাসস্থান, কার্যালয় এবং সব ধরনের গমনাগমনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। এ ছাড়া ঢাকার অভ্যন্তরে এবং বাইরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। সম্প্রতি কক্সবাজার ও রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন এবং চট্টগ্রাম বন্দর ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এসএসএফ অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে সফলভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। শুধু দেশের অভ্যন্তরেই নয়, দেশের বাইরেও আমার রাষ্ট্রীয় সফরগুলোতে এসএসএফ বিভিন্ন দূতাবাস এবং সংশ্লিষ্ট দেশের প্রটোকল ও নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে একযোগে কাজ করে সফরগুলো সাফল্যমণ্ডিত করেছে। এ ছাড়া বাংলাদেশে আসা মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী, পূর্ব তিমুরের রাষ্ট্রপতি ও জাতিসংঘের মহাসচিবের রাষ্ট্রীয় সফরের সামগ্রিক নিরাপত্তা এই বাহিনী অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছে। 

বর্তমান বিশ্বে আধুনিক প্রযুক্তি ও তথ্য আদান-প্রদান খুব সহজ হওয়ার কারণে নিরাপত্তা হুমকির ধরন ও প্রকৃতি দ্রুত পরিবর্তনশীল হওয়ার কারণে শতভাগ নিরাপত্তা দেওয়া খুবই চ্যালেঞ্জিং বিষয় জানিয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও এসএসএফ সুষ্ঠুভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। এসএসএফ নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের নিরাপত্তা হুমকি পর্যালোচনা করবে এবং সেগুলো মোকাবিলা করার জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করবে। 

ড. ইউনূস বলেন, সম্প্রতি এসএসএফ যমুনার সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুসংহত করেছে। এসএসএফ একইভাবে এই কার্যালয়েরও সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করবে। এসএসএফ একটি পেশাদার বাহিনী হিসেবে উন্নত প্রশিক্ষণ, উন্নত প্রযুক্তি এবং উন্নত মনোবলের সন্নিবেশে দিন দিন আরো উন্নতি সাধন করবে।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে এসএসএফ মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুস সামাদ চৌধুরী বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, তিন বাহিনী প্রধান, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব মো. সিরাজ উদ্দিন মিয়া, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা এক্সপ্রেস/আরইউ

আরও পড়ুন