ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

১৯ আষাঢ় ১৪৩২, ০৭ মুহররম ১৪৪৭

শিরোনাম

Scroll
ইতালির নাগরিক তাবেলা সিজার হত্যা মামলার রায় আজ
Scroll
বান্দরবানের রুমায় দুর্গম পাহাড়ে সেনাবাহিনীর অভিযানে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের কমান্ডারসহ দুই সদস্য নিহত
Scroll
সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয় গ্রেপ্তার
Scroll
চট্টগ্রামের পটিয়া থানার ওসি আবু জায়েদ মো. নাজমুন নূরকে প্রত্যাহার করা হয়েছে
Scroll
মৌলভীবাজারের বড়লেখা সীমান্ত দিয়ে আরো ৪৮ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ
Scroll
কুমিল্লার মুরাদনগরে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে একই পরিবারের তিনজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা
Scroll
পদত্যাগপত্র জমা দিলেন শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা পরিচালক চিত্রশিল্পী ও শিল্প সমালোচক মোস্তফা জামান
Scroll
ইন্দোনেশিয়ার বালিতে ৬৫ যাত্রী নিয়ে ফেরিডুবি, নিখোঁজ ৪৩

শাটডাউনের জবাব? আন্দোলনে যুক্ত চার কর্মকর্তাকে সরাল সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯:৩৬, ২ জুলাই ২০২৫

শাটডাউনের জবাব? আন্দোলনে যুক্ত চার কর্মকর্তাকে সরাল সরকার

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) চলমান অস্থিরতার মধ্যে আন্দোলনে সক্রিয় চারজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। সরকার ‘জনস্বার্থে’ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ থেকে বুধবার জারি করা পৃথক চারটি প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।

অবসরে পাঠানো কর্মকর্তারা হলেন— এনবিআরের সদস্য (শুল্কনীতি) হোসেন আহমদ, সদস্য (আয়কর) মো. আলমগীর হোসেন, সদস্য (ভ্যাটনীতি) মো. আব্দুর রউফ এবং কর কমিশনার (আয়কর) শব্বির আহমদ। তারা সবাই সরকারি চাকরিতে ২৫ বছর পূর্ণ করেছেন এবং তাদের কর্মকাণ্ড সাম্প্রতিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিল বলে প্রশাসনিক মহলে আলোচিত।

এর আগের দিন মঙ্গলবার চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ বন্ধ রাখার অভিযোগে কমিশনার মো. জাকির হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তাকে ওএসডি করে রাখা হয়েছে। ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, তিনি সরকারের ‘নির্দেশনা অমান্য করে’ প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এনবিআরে বিদ্যমান কাঠামো ভেঙে দুটি পৃথক বিভাগ— রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা— গঠনের লক্ষ্যে সরকার চলতি বছরের মে মাসে একটি অধ্যাদেশ জারি করে। এরপর থেকেই এনবিআরের কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ দানা বাঁধে। কর্মচারীরা শুরু করেন ধারাবাহিক আন্দোলন। প্রথমে সরকার অধ্যাদেশ স্থগিত রাখে এবং আলোচনার মাধ্যমে সংস্কার এগিয়ে নেওয়ার আশ্বাস দেয়। কিন্তু এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তার অপসারণ দাবিতে শুরু হয় নতুন করে আরও কঠোর কর্মসূচি।

গত সপ্তাহে চালু হয় ‘কমপ্লিট শাটডাউন’। শনিবার থেকে দেশের বিভিন্ন কাস্টমস ও ভ্যাট অফিসে কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। সরকার তখন বিষয়টিকে ‘অত্যাবশ্যকীয় সেবা’ ঘোষণা করে এবং আন্দোলনকারীদের কাজে ফেরার নির্দেশ দেয়। এর মধ্যেই দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ছয়জন আন্দোলনকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করে।

এনবিআরের যে চারজন শীর্ষ কর্মকর্তা এবার বাধ্যতামূলক অবসরে গেছেন, তাদের সবাইকে আন্দোলনের শেষ পর্যায়ে নেতৃত্ব দিতে দেখা গেছে। হোসেন আহমদ, আলমগীর হোসেন ও আব্দুর রউফ আন্দোলনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। শব্বির আহমদ বিভিন্ন সেমিনারে এনবিআর সংস্কারের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সক্রিয় ছিলেন।

আন্দোলনের সমাপ্তির পেছনে মূল ভূমিকা রাখে ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যস্থতা। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে অস্বীকৃতি জানান। পরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে সমঝোতার সূত্র মেলে। তাদের আশ্বাসে আন্দোলনকারীরা শাটডাউন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন এবং রবিবার রাত থেকেই অফিস খোলা হয়। সোমবার থেকে সব কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজে ফিরলেও ভবিষ্যৎ নিয়ে তাদের মধ্যে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।

একইসঙ্গে মঙ্গলবার আরও পাঁচ এনবিআর কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। সরকারের পক্ষ থেকে সংকট মোকাবেলায় পাঁচ উপদেষ্টার সমন্বয়ে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। যদিও আন্দোলন আপাতত স্থগিত, তবে বরখাস্ত, বদলি ও মামলার আতঙ্ক এনবিআরের অন্দরমহলে এখনও বিদ্যমান।

ঢাকা এক্সপ্রেস/ এমআরএইচ

আরও পড়ুন