শিরোনাম
ড. আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী
প্রকাশ: ১৬:০১, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
ড. আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী । ছবি: সংগৃহীত
তিনি অত্যন্ত সূক্ষ্ম দৃষ্টিকোণ থেকে এ দেশের মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। কাজেই এ দেশের মানুষের সাধারণ বৈশিষ্ট্য তার দৃষ্টি এড়ায়নি। উল্লিখিত সমাজবিজ্ঞানীর এই মন্তব্য হয়তো ঢালওভাবে সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়, কিন্তু তাই বলে একে উপেক্ষা করা যাবে না। বাংলাদেশের সমাজব্যবস্থায় যেসব সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যমান, তার মধ্যে উল্লিখিত সমস্যা দুটি অন্যতম।
ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের কারণে বাংলাদেশের মানুষের চরিত্র এবং আচার-আচরণ পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় কিছুটা হলেও ব্যতিক্রমধর্মী। এরা যেমন কাউকে সহজে আপন করে নিতে পারে, তেমনি সম্পর্কের সামান্য ব্যত্যয় ঘটলে তাদের মাঝে হিংস্রতার উদ্ভব ঘটতে পারে। অতীত সম্পর্ক ভুলে গিয়ে তাকে আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করতে পারে। একবার সম্রাট জাহাঙ্গীর বাংলাদেশে ভ্রমণে এসে নদীতে জোয়ার-ভাটা প্রত্যক্ষ করে নাকি মন্তব্য করেছিলেন, যে দেশের নদীর পানি সকালে একদিকে এবং বিকেলে অন্যদিকে ধাবিত হয়, সে দেশের মানুষের মন বোঝা বড়ই কঠিন।
এই অঞ্চলের মানুষ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে অত্যন্ত উদার হলেও অনেকের মাঝেই স্বার্থ উদ্ধারের জন্য যেকোনো পন্থা গ্রহণের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়।
আজকাল অনেকের মুখে শোনা যায়, দেশটি বসবাসের প্রায় অযোগ্য হয়ে পড়েছে। আগের সেই দিনকাল আর নেই। মানুষের মাঝে সম্পর্ক সৃষ্টি এবং রক্ষার ক্ষেত্রে আন্তরিকতার অভাব দেখা দিয়েছে। দেশের বাস্তব পরিস্থিতিই সম্ভবত মানুষের মনে এই ধারণার জন্ম দিয়েছে।
স্বাভাবিকভাবে জনকল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করার প্রবণতা আগের চেয়ে অনেকটাই কমে গেছে। আগে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে সামাজিক পুঁজির বিকাশ লক্ষ করা যেত। এখন তা অনেকটাই বিলুপ্তির পথে। সামাজিক পুঁজি বলতে এমন একটি অবস্থাকে আমরা বুঝে থাকি, যেখানে একজনের প্রয়োজনে আরেকজন নিজের স্বার্থের কথা বিবেচনা না করেই সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিত। অতীতে আমরা দেখেছি, যখন কোনো কৃষকের জমিতে ফসল তোলার সময় হতো, তখন এলাকার অনেকেই স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ফসল তুলে দিত। রাস্তা নির্মাণের প্রয়োজন হলে সরকারের প্রতি তাকিয়ে না থেকে নিজেরাই স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে রাস্তা নির্মাণ করত।
এ ধরনের প্রবণতা এখন খুব একটা প্রত্যক্ষ করা যায় না। আগেকার দিনের মতো সামাজিক বন্ধন চোখে পড়ে না। বরং উল্টো হানাহানি, রাহাজানি প্রাধান্য পাচ্ছে গ্রামীণ সমাজে। মানুষ ক্রমেই আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছে।
একসময় বাংলাদেশের অর্থনীতি ছিল মূলত গ্রামকেন্দ্রিক। জিডিপির ৯০ শতাংশই আসত গ্রামীণ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে। এখন এই অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। কয়েক বছর আগের এক পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, বাংলাদেশের গ্রামীণ অর্থনীতি এবং সামাজিক অবস্থার ক্রমাবনতি ঘটছে। একসময় মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশের মতো বাস করত গ্রামে। যারা গ্রাম ছেড়ে শহরে কর্মসংস্থানের জন্য আসত, তারাও সপ্তাহান্তে গ্রামে পরিবারের কাছে ফিরে যেত। কিন্তু এখন সেই অবস্থা আর নেই। কেউ একজন গ্রাম থেকে শহরে অভিবাসন করলে সে আর গ্রামে ফিরে যেতে চায় না।
বর্তমানে শহর হয়ে উঠেছে অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র। মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশের মতো বাস করে শহরে। আর জিডিপির ৬০ শতাংশেরও বেশি অর্জিত হয় শহরকেন্দ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ভরকেন্দ্র দ্রুত গ্রাম থেকে শহরে সরে আসছে। অন্যদিকে গ্রামীণ আর্থ-সামাজিক অবস্থার ব্যাপক রূপান্তর ঘটছে। আগে যারা প্রভাব-প্রতিপত্তির অধিকারী ছিল, তারা ক্রমেই ক্ষয়িষ্ণু পরিবারে পরিণত হচ্ছে। অন্যদিকে একসময় যারা একেবারেই দরিদ্র ছিল, তাদের অনেকেই এখন দ্রুত নতুন মধ্যবিত্ত শ্রেণিতে উন্নীত হচ্ছে। এর পেছনে মূল ভূমিকা পালন করেছে বিদেশগামিতা।
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে জনশক্তি রপ্তানি খাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের দ্বিতীয় বৃহত্তম খাত হচ্ছে জনশক্তি রপ্তানি খাত। প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে যারা কর্মসংস্থানের উপলক্ষে বিদেশে গমন করেন, তাদের বৃহদংশই গ্রামীণ এলাকার দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা। তারা যেকোনোভাবেই হোক, জমিজিরাত বিক্রি করে বিদেশে চলে যাচ্ছে। একসময় প্রবাসী কর্মীদের প্রেরিত রেমিট্যান্স দিয়ে বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের পরিবারগুলো আর্থিক সচ্ছলতার মুখ দেখছে। যে পরিবার থেকে কেউ একজন বিদেশে কর্মসংস্থানের জন্য গমন করেন, তার পরিবারের প্রাথমিক কাজ হয়ে দাঁড়ায় প্রেরিত রেমিট্যান্স দিয়ে জমি ক্রয় এবং বাড়ি নির্মাণ। দেশে আসা রেমিট্যান্স শিল্পে বা অন্য কোনো বিকল্প আয়বর্ধক কাজে ব্যবহার করা গেলে গ্রামীণ অর্থনীতি আরো চাঙ্গা হতো।
কয়েক বছর আগে একটি বিদেশি সংস্থার গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছিল, বাংলাদেশে মধ্যবিত্ত শ্রেণির পরিবারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিন দশক আগেও বাংলাদেশের ১২ শতাংশ পরিবার মধ্যবিত্ত ছিল। এখন তা ২০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। মধ্যবিত্ত পরিবারের এই উত্থানের পেছনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবদান কোনোভাবেই অস্বীকার করা যাবে না। সাম্প্রতিক সময়ে শুধু যে মধ্যবিত্ত পরিবারের হার বেড়েছে তা নয়, তাদের ক্রয়ক্ষমতা বা ভোগ ব্যয়ের সামর্থ্যও বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় এই প্রবণতা প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে। শহুরে জীবনে যেসব উপকরণ ব্যবহৃত হতো, তা এখন গ্রামীণ এলাকায়ও সম্প্রসারিত হয়েছে। কালার টিভি, ফ্রিজ, এমনকি এসি এখন গ্রামীণ পরিবারেও ব্যবহার করতে দেখা যায়।
তবে বিগত সাড়ে ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসনামলে শহুরে জীবনের মতো গ্রামীণ সমাজব্যবস্থাও কলুষিত হয়েছে। চাঁদাবাজি, রাজনৈতিক সন্ত্রাস, খুন-জখম, রাজনৈতিক হানাহানি এখন শহরের মতো গ্রামীণ জীবনেও সঞ্চারিত হয়েছে। দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগে যারা গ্রামে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হতেন, তাদের সবাই সম্মান করত। এখন যারা জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হন, তারা জনসমর্থন নিয়ে নির্বাচিত হন না।
ভোট কারচুপির মাধ্যমে তারা ক্ষমতা দখল করে নেন। নির্বাচিত হয়েই তারা চাঁদাবাজি-দখলবাজিতে লিপ্ত হয়ে পড়েন। গ্রামীণ সমাজে এখন টাউট-বাটপাড়ের উপস্থিতি প্রত্যক্ষ করা যায় আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। গ্রামীণ এলাকায় প্রতারক শ্রেণি নানাভাবে সাধারণ মানুষের সম্পদ ও অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।
শুধু গ্রামীণ সমাজব্যবস্থায়ই নয়, পুরো দেশের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থায় এক ধরনের কলুষতা প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে। বিশেষ করে উচ্চশিক্ষিত এবং সমাজের প্রভাবশালী একটি শ্রেণির অনৈতিক কর্মকাণ্ড যেকোনো বিবেকবান মানুষকেই ব্যথিত করবে। এখন যেন অর্থই মুখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। কীভাবে সেই অর্থ উপার্জিত হচ্ছে, তা ভেবে দেখার কোনো অবকাশ কারো নেই। সবাই অর্থের পেছনে ছুটছে।
একজন পণ্ডিত ব্যক্তি বলেছিলেন, অর্থ হচ্ছে সেকেন্ড গড বা দ্বিতীয় প্রভু। কিছু মানুষের কর্মকাণ্ড প্রত্যক্ষ করলে অনুধাবন করা যায়, এই প্রবাদ বাক্যটি যথার্থই ছিল। দুর্নীতির বিষবাষ্প শহর থেকে গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে। গ্রাম এলাকায়ও কেউ একজন জনপ্রতিনিধি হতে পারলে তার পক্ষে মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়া বিচিত্র নয়। তারা প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য যেকোনো ঘৃণ্য পন্থা অনুসরণ করতেও দ্বিধা করেন না।
সমাজব্যবস্থার এই অধঃপতনের জন্য আমাদের প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা বহুলাংশে দায়ী। শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে একটি পরিশীলিত এবং মানবিক গুণাবলিসম্পন্ন প্রজন্ম গড়ে তোলা। মানুষের মনোজগতে বিদ্যমান মানবিক গুণাবলিকে জাগিয়ে তোলা, যাতে তারা সমাজের উন্নয়নে নিজেদের উৎসর্গ করতে পারে। কিন্তু আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা সেটি করতে পারেনি। আমাদের দেশে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হচ্ছে দক্ষ এবং কর্মক্ষম মানবিক গুণাবলি সম্পন্ন মানুষ তৈরি করা, কিন্তু সেটি হচ্ছে না। আমরা প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক উচ্চশিক্ষিত তরুণ-তরুণীকে শিক্ষা সমাপন করে বের হতে দেখছি। কিন্তু তাদের মধ্যে কজন আছে, যারা প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত?
বাংলাদেশের আগামী প্রজন্ম যাতে সত্যিকার শিক্ষিত এবং মানবিক গুণাবলি সম্পন্ন হয়ে গড়ে উঠতে না পারে, সে জন্য বিভিন্ন মহল থেকে চক্রান্ত করা হয়। বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা মোটেও কর্মমুখী নয়। একজন উচ্চশিক্ষিত তরুণ-তরুণী সর্বোচ্চ ডিগ্রি নেওয়ার পরও নিশ্চিত হতে পারছে না সে উপযুক্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে কিনা। কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা না থাকার কারণে উচ্চশিক্ষিতদের মধ্যে বিদেশ গমনের প্রবণতা বাড়ছে। প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা উচ্চশিক্ষিত অহমিকাপূর্ণ বেকার তৈরি করছে মাত্র। যারা দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারছে না, তারা বিদেশে চলে যাচ্ছে এবং অনেকেই সাধারণ মানের কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ অত্যন্ত সৃজনশীল ক্ষমতার অধিকারী, কিন্তু তারা প্রতিভা বিকাশের মতো উপযুক্ত পরিবেশ পাচ্ছে না।
সমাজে ক্রমবর্ধমান দুর্নীতি এবং নৈতিক অবক্ষয়ের জন্য রাজনৈতিক নেতাদের ব্যর্থতাও অনেকাংশে দায়ী। রাজনীতিবিদদের অনেকেই ব্যাপক মাত্রায় দুর্নীতি এবং অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত। সুনাগরিক হতে হলে একজন মানুষকে সৎ এবং মানবিক গুণাবলি সম্পন্ন দেশপ্রেমিক হতে হবে। কিন্তু আমরা শিক্ষার্থীদের মাঝে এই গুণাবলি সঞ্চারিত করতে পারছি না। সর্বস্তরে ব্যাপক মাত্রায় দলীয়করণ, রাজনৈতিকীকরণের কারণে মানুষের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি হচ্ছে। সুনাগরিক হওয়ার শিক্ষা প্রাথমিক পর্যায়ে পরিবার থেকে দিতে হবে। পরবর্তী সময়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার মাধ্যমে সেই গুণাবলিকে আরো পরিশীলিত এবং ব্যাপৃত করতে হবে।
বর্তমানে যারা তরুণ প্রজন্ম, তাদের মধ্যে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় তারা প্রমাণ করেছে কীভাবে স্বৈরাচারী সরকারের মসনদ উল্টে দিতে হয়। এই প্রজন্মকে যদি আমরা নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে পারি, তাহলে তারা ভবিষ্যতে দেশ ও সমাজের চেহারা বদলে দিতে পারবে। কিন্তু জাতীয় পর্যায়ে আমাদের কি তেমন কোনো পরিকল্পনা আছে?
দেশে যদি সুনাগরিক গড়ে তোলার উপযোগী শিক্ষা কার্যক্রম নিশ্চিত করা যেত, তাহলে দুর্নীতির মাত্রা অনেকটাই হ্রাস পেত। উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত এবং সত্যিকার দেশপ্রেমিক একজন মানুষ কখনোই দুর্নীতি করতে পারে না। আমাদের ব্যর্থতা এখানেই যে আমরা প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক ছাত্র-ছাত্রীকে উচ্চতর ডিগ্রি প্রদান করছি, কিন্তু তাদের মধ্যে কতজন সত্যিকার দেশপ্রেমিক এবং আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠছে তার খোঁজ রাখছি না। শিক্ষার মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে মানুষের সুকুমারবৃত্তিকে জাগ্রত করে তাকে একজন আদর্শ দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা।
দেশ অনেক দিন গণতন্ত্রহীনতার মধ্যে ছিল। ছিল স্বৈরাচারী ব্যবস্থার অধীনে। গণতন্ত্রহীন সমাজে সুকুমারবৃত্তির যথাযথ বিকাশ ঘটে না। মানুষের মাঝে হানাহানি, প্রতারণা এবং দুর্নীতির প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। বিগত সাড়ে ১৫ বছরে দেশের সামাজিক অবস্থাকে পরিকল্পিতভাবে কলুষিত করা হয়েছে। সমাজব্যবস্থা এখন দুর্নীতি আর অনাচারের কবলে পতিত হয়েছে, যার পরিণতি এখন আমরা ভোগ করছি। ভবিষ্যতেও অনেক দিন আমাদের স্বৈরাচারের কুফল ভোগ করতে হবে। এই মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হচ্ছে চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের উন্নয়নের জন্য মানবিক গুণাবলির বিকাশ ঘটানো। আর এটি সম্ভব একমাত্র উপযুক্ত জ্ঞানচর্চার মাধ্যমে।
পারিবারিক পরিমণ্ডল থেকে নৈতিক শিক্ষা বিস্তার শুরু করতে হবে। সামাজিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত হচ্ছে একটি উদার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েম করা, যেখানে সমাজের প্রতিটি মানুষ তার ন্যায়সংগত অধিকার নিয়ে বাঁচতে পারবে। এভাবেই একটি সুখী-সমৃদ্ধিশালী সমাজ বিনির্মাণে আমরা এগিয়ে যেতে পারি।
ড. আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী : সাবেক উপাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাহরাইনে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত
ঢাকা এক্সপ্রেস/ এসএ