শিরোনাম
মাহমুদুন্নবী চঞ্চল
প্রকাশ: ১৮:৫৮, ২৭ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ১৯:০২, ২৭ জুলাই ২০২৫
দুই জয়ে যেন নতুন করে আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছে গোটা দল। ছবি: সংগৃহীত
সবচেয়ে বড় কথা, দলের ভেতর একটা স্থিরতা এসেছে। শুরুটা ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতে, তারপর পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মাঠে সিরিজের প্রথম ম্যাচ হেরে ধুঁকছিল দল। অধিনায়ক লিটন দাস ছিলেন প্রচণ্ড চাপের মুখে। কিন্তু সেখান থেকেই ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। কলম্বোয় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৮৩ রানের জয়ের মধ্য দিয়েই শুরু হয় নতুন পথচলা।
মিরপুরে ফিরে আরও পরিণত ক্রিকেট খেলে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম দুটি ম্যাচ জিতে নিশ্চিত করে সিরিজ। শেষ ম্যাচে পাঁচটি পরিবর্তনের কারণে ধবলধোলাই না হলেও দুই জয় যথেষ্ট বলেই মানছেন অনেকে। বিশেষ করে মানসিক দিক থেকে এটি ছিল বড় এক জবাব।
অধিনায়ক লিটনের মতে, জয়ের পেছনে মূল ভূমিকা ছিল পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও দল গোছানোর। তার ভাষায়, ‘আমরা পুরো স্কোয়াডটা এবার সঙ্গে রাখতে পেরেছি, তাই দল হিসেবে খেলাটা সহজ হয়েছে।’ বোলারদের কৃতিত্ব দিতেও তিনি কার্পণ্য করেননি। প্রথম ম্যাচে ১১০-তে প্রতিপক্ষকে অলআউট করা বা দ্বিতীয় ম্যাচে ১৩৫ রান ডিফেন্ড করা। সবই বোলারদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের ফল। তাই বিশ্বকাপ সামনে রেখে তাসকিন-শরিফুলদের বিশ্রাম দিয়ে রাখাটা একেবারে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত।
তবে হতাশার জায়গাও আছে। বিশেষ করে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করতে না পারার আক্ষেপ। শেষ ম্যাচে পাঁচটি পরিবর্তন এনে পরীক্ষামূলক দল নামায় বাংলাদেশ, যার খেসারত হিসেবে আসে ৭৪ রানের বড় পরাজয়। সাবেক পাকিস্তানি ক্রিকেটার রমিজ রাজা যেমন বলছেন, মোস্তাফিজ বা ইমন খেললে ম্যাচটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হতো।
তবে লিটনের অবস্থান একটু আলাদা। তার মতে, সিরিজ শেষে স্কোয়াডের সবাইকে দেখে নেওয়ার চেষ্টা ছিল সেটি। যদিও স্বীকার করেছেন, ডেথ ওভারে দুর্বলতা রয়ে গেছে। সামনে এশিয়া কাপ, তারপর বিশ্বকাপ। এই অল্প সময়েই সেই ঘাটতি পুষিয়ে নিতে হবে। তবে মিডল অর্ডারে হৃদয়, জাকের ও শামীমদের নিয়ে তিনি আত্মবিশ্বাসী। বলছেন, ‘এরা এখন বাংলাদেশের সেরা।’
টানা দুটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের পর এখন বিশ্রামে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। সামনে রয়েছে বড় লক্ষ্য, এশিয়া কাপ। যার জন্য প্রায় দেড় মাসের প্রস্তুতির বিরতি পাচ্ছে দল।
এশিয়া কাপের এবারের সংস্করণ অনুষ্ঠিত হবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে, সেপ্টেম্বর মাসে। যদিও এখনো টুর্নামেন্টের সূচি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। তবে আয়োজক দেশ ও সম্ভাব্য ভেন্যু নিয়ে কিছুটা ধারণা মিলেছে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) সাম্প্রতিক সভা থেকে।
ভারত এবারের এশিয়া কাপের আয়োজক। তবে পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আয়োজক যদি হয় ভারত কিংবা পাকিস্তান, তাহলে প্রতিযোগিতা হবে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে। সেই নীতির ধারাবাহিকতায় এবারের আসরটি গড়াতে পারে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। যেখানে এর আগেও বেশ কয়েকবার সফলভাবে টুর্নামেন্ট আয়োজন হয়েছে।
আরও একটি উত্তেজনা অপেক্ষা করছে। এই আসরে গ্রুপ পর্বেই আবার মুখোমুখি হতে পারে ভারত ও পাকিস্তান। দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াই বরাবরের মতোই টুর্নামেন্টে বাড়তি রোমাঞ্চ যোগ করবে। এসিসির গঠিত প্রাথমিক পরিকল্পনায় এমন সম্ভাবনার কথাই উঠে এসেছে।
এদিকে বাংলাদেশ দলের সামনে এই সময়টা শুধু বিশ্রামের নয়, একই সঙ্গে প্রস্তুতিরও। দীর্ঘ বিরতির পর খেলোয়াড়দের ফিটনেস ধরে রাখা ও ফর্মে ফিরে আসা হবে দলের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। দল হিসেবে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হলে এই সময়ের সদ্ব্যবহার করতেই হবে।
ঢাকা এক্সপ্রেস/ এসএ