শিরোনাম
ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশ: ১২:০৯, ১৯ মে ২০২৫
ছবি: সংগৃহীত
শরিয়তের নির্ধারিত পরিমাণ সম্পদের মালিক— অর্থাৎ যিনি নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক, তার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব হয়। অর্থবছরের ওই তিন দিন (১০-১২ জিলহজ) যদি কেউ নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হন, তবে তার ওপর কোরবানি আবশ্যক হয়ে যায়। এই ইবাদত পালন করতে হয় নির্দিষ্ট নিয়মে পশু জবাইয়ের মাধ্যমে।
কোরআনে আল্লাহ তায়ালা কোরবানির গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে বলেন, আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্য কোরবানি নির্ধারণ করেছি, যাতে তারা হালাল পশু জবেহ করার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে। (সুরা হজ, আয়াত: ৩৪)
তিনি আরো বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে কোরবানির পশুর গোশত বা রক্ত কিছুই পৌঁছায় না; বরং তার কাছে পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া। (সুরা হজ, আয়াত: ৩৭)
এই আয়াতদ্বয়ে স্পষ্ট যে, কোরবানি মূলত এক আত্মিক অনুশীলন, যার মাধ্যমে একজন মু’মিন তার ভেতরের খাঁটি ইমান ও ত্যাগের মানসিকতা তুলে ধরে।
জায়েদ ইবনে আরকাম (রা.) একবার রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, কোরবানি কী?’ তিনি উত্তর দেন, এটি হচ্ছে তোমাদের আদি পিতা ইবরাহিম (আ.)-এর সুন্নাত। আর কোরবানির ফজিলত সম্পর্কে বলেন, প্রতিটি পশমের বিনিময়ে একটি করে নেকি লেখা হয়। (মিশকাত, হাদিস: ১২৯)
রাসুল (সা.) আরো বলেন, কোরবানির পশুর রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই তা আল্লাহর দরবারে কবুল হয়ে যায় এবং কোরবানিদাতার পূর্বের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। (তিরমিজি, হাদিস: ১/১৮০)
তিনি আরো উৎসাহ দিয়ে বলেন, তোমরা মোটা ও সুস্থ-সবল পশু কোরবানি করো, কারণ এসবই পুলসিরাত পার হওয়ার বাহন হবে। (মুসলিম, হাদিস: ২৬৩৯)
প্রখ্যাত সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনায় ১০ বছর অবস্থানকালে প্রতি বছরই কোরবানি করেছেন। (তিরমিজি, হাদিস: ১/১৮৯)
ইসলামের সূচনালগ্নে কোরবানির গোশত তিন দিনের বেশি সংরক্ষণের অনুমতি ছিল না। রাসুল (সা.) সে সময় বলেছিলেন— তোমরা তিন দিন পর্যন্ত কোরবানির গোশত রেখে খেতে পারো, এরপর যা অবশিষ্ট থাকে তা সদকা করে দাও।
পরবর্তীতে মানুষ কিছুটা স্বাচ্ছন্দ্যে এলে তিনি সে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে বলেন— আগে আমি দরিদ্রদের কথা বিবেচনায় নিয়ে নিষেধ করেছিলাম। এখন তোমরা গোশত খাও, অন্যকে খাওয়াও এবং সংরক্ষণও করো। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৯৭১)
বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও ফকিহ ইবনু আবদিল বার (রহ.) উল্লেখ করেছেন, সম্মানিত আলিমগণ একমত যে, কোরবানির গোশত তিন দিনের বেশি সংরক্ষণে আর কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। (আত-তামহিদ: ৩/২১৬)
ঢাকা এক্সপ্রেস/আরইউ