শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৭:১৯, ৫ জুন ২০২৫
তালবিয়ার শব্দ ও অর্থ
لَبَّيْكَ اللَّهُمَّ لَبَّيْكَ، لَبَّيْكَ لَا شَرِيكَ لَكَ لَبَّيْكَ، إِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ، لَا شَرِيكَ لَكَ
বাংলা অনুবাদ:
“আমি আপনার ডাকে সাড়া দিয়েছি (হে আল্লাহ), আমি আপনার ডাকে সাড়া দিয়েছি। আপনার কোনো শরিক নেই, আমি সাড়া দিয়েছি। সব প্রশংসা, নিয়ামত ও রাজত্ব আপনারই, আপনার কোনো শরিক নেই।”
(সহিহ বুখারি: ১৫৪৯, সহিহ মুসলিম: ২৮১১)
তালবিয়া পাঠের সময় নির্ভর করে হজ বা ওমরাহ পালনকারীর ইহরামের অবস্থার ওপর।
ওমরাহকারীদের জন্য: ইহরাম বাঁধা থেকে শুরু করে কাবা শরিফের তাওয়াফ শুরু করার আগ পর্যন্ত। তাওয়াফ শুরুর আগে তালবিয়া বন্ধ করতে হয়।
হজ পালনকারীদের জন্য: ইহরাম বাঁধা থেকে শুরু করে ১০ জিলহজ জামারাতুল আকাবায় কঙ্কর নিক্ষেপ করার আগ পর্যন্ত তালবিয়া পাঠ করা সুন্নত।
রাসুলুল্লাহ (সা.) সম্পর্কে সাহাবি ফজল ইবন আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, “তিনি জামারাতুল আকাবায় কঙ্কর নিক্ষেপ না করা পর্যন্ত তালবিয়া পাঠ করতেন।” (বুখারি: ১৫৪৪)
তালবিয়া পাঠের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য কিছু বিধান রয়েছে—
পুরুষদের জন্য: ইহরাম বাঁধার সময় ও পরে উচ্চস্বরে তালবিয়া পাঠ করা উত্তম।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, “জিবরিল (আ.) আমার কাছে এসে বললেন—তোমার সঙ্গীদের তালবিয়া উচ্চ কণ্ঠে পাঠ করতে বলো।” (আবু দাউদ: ১৮১৪)
নারীদের জন্য: তারা উচ্চস্বরে তালবিয়া পাঠ করবে না। নিজ কণ্ঠে নিজে শুনতে পারেন—এমন স্বরে পাঠ করবে। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা: ১৪৮৮২)
বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে, তালবিয়া সম্পূর্ণভাবে পাঠ করা জরুরি। এর কোনো অংশ বাদ দেওয়া মাকরুহ (অপছন্দনীয়)। (আদ্দুররুল মুখতার: ২/৪৮৪, ফাতাওয়া হিন্দিয়া: ১/১২৩)
তালবিয়া শুধু মুখের বাক্য নয়, এর রয়েছে গভীর তাৎপর্য ও আধ্যাত্মিক প্রভাব।
১. হজ ও ওমরাহর প্রবেশঘোষণা: এটি হজ ও ওমরাহ শুরুর স্লোগান। তালবিয়া পাঠের মাধ্যমে মুমিন মুসলিম আল্লাহর আহ্বানে আনুষ্ঠানিকভাবে সাড়া দেন।
২. পৃথিবীর জড় জগৎও সাড়া দেয়:
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যখন কোনো মুসলমান তালবিয়া পাঠ করে, তখন তার ডান ও বাম পাশের পাথর, বৃক্ষ, মাটি—সবকিছু তার সঙ্গে তালবিয়া পাঠ করতে থাকে, এমনকি দিগন্ত পর্যন্ত তা ছড়িয়ে পড়ে।’ (তিরমিজি: ৮২৮)
তালবিয়া হজযাত্রীদের জন্য শুধু একটি ইবাদতের অংশ নয়, এটি একটি আত্মিক ঘোষণা—আল্লাহর ডাকে পূর্ণ আত্মসমর্পণের প্রকাশ। প্রতিটি উচ্চারণে থাকে আনুগত্য, বিনয় ও তাওহিদের পুনঃপ্রতিশ্রুতি।
আসুন, আমরা যারা হজ বা ওমরাহ করতে যাচ্ছি বা যাওয়ার নিয়ত করেছি, তারা তালবিয়ার গুরুত্ব উপলব্ধি করি এবং যথাযথ নিয়মে তা পাঠ করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে ব্রত হই।
اللهم تقبل منا حجنا وعمرتنا، آمين
ঢাকা এক্সপ্রেস/ এমআরএইচ