কাপ্তাই হ্রদের পানির স্তর ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে এই বছরের সর্বোচ্চ পানি স্তর ১০৮.৮৪ এমএসএল রেকর্ড হয়, যার ফলে কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি গেট সাড়ে তিন ফুট উচ্চতায় খুলে দেওয়া হয়। সেই কারণে পানি স্তর ধীরে ধীরে কমতে থাকে। শনিবার বিকাল পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদের পানি ১০৮.৪০ এমএসএল ছিল। এই অবস্থায় এখনও গেট তিন ফুট উচ্চতায় খোলা রয়েছে এবং প্রতি সেকেন্ডে ৫৮ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে নিষ্কাশিত হচ্ছে।
যদিও পানি কমছে, কিন্তু কাপ্তাই জেলায় পানিবন্দিদের সংখ্যা উল্টো বাড়ছে। জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, শুক্রবার পর্যন্ত পানিবন্দি ছিল প্রায় ১৮ হাজার, যা শনিবার বেড়ে ২৩ হাজার ১২০ জনে পৌঁছেছে। স্থানীয়রা জানান, হ্রদের পানি কমলেও নদীর পানির কারণে বিভিন্ন স্থানে বন্যার পানিতে পানি আটকা পড়ায় পানিবন্দিদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
পানি কমতে থাকায় সীমান্তবর্তী উপজেলা বাঘাইছড়িতে মানুষ আস্তে আস্তে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরছেন। তবে লংগদু, বরকল ও রাঙামাটি সদর উপজেলার আসামবস্তি, পুরানপাড়া, শান্তি নগরের নিম্নাঞ্চলগুলোতে এখনো পানি কমেনি। বৃষ্টি না হলে দ্রুত পানি কমার আশায় তারা রয়েছেন।
অন্যদিকে কর্ণফুলী নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে টানা তৃতীয় দিন চন্দ্রঘোণা-রাইখালী ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। এতে রাঙামাটি জেলা সদরের সাথে রাজস্থলী উপজেলা ও বান্দরবান জেলা সদরের যোগাযোগ ব্যাহত হয়েছে, যা চলাচলকারীদের জন্য দুর্ভোগের কারণ হয়েছে।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, বন্যার্তদের জন্য ২৪৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ১৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে এখনও ২ হাজার ৮৯৪ জন মানুষ অবস্থান করছেন। বন্যায় জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৮৩৭টি ঘরবাড়ি, ২৩৯ হেক্টর ফসলিজমি, ২০০টি গবাদি পশু ও ৫৯টি মৎস্য খামার।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিন জানান, বৃষ্টি কমে আসায় ধীরে ধীরে হ্রদের পানি স্তর কমছে। শনিবার সকালে পানি ছিল ১০৮.৪০ এমএসএল। এ ছাড়া পানিবন্দি মানুষের জন্য ঘরে ঘরে গিয়ে ১,৩৩৬ প্যাকেট শুকনো খাবার এবং ৯ মেট্রিক টন চাউল বিতরণ করা হয়েছে।