ঢাকা, শনিবার, ০২ আগস্ট ২০২৫

১৮ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৭ সফর ১৪৪৭

গাজায় যুদ্ধবিরতি-ত্রাণ ইস্যুতে নেতানিয়াহু-যুক্তরাষ্ট্র দূতের বৈঠক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৫:৪৩, ১ আগস্ট ২০২৫

গাজায় যুদ্ধবিরতি-ত্রাণ ইস্যুতে নেতানিয়াহু-যুক্তরাষ্ট্র দূতের বৈঠক

ছবি: সংগৃহীত

গাজা উপত্যকায় চলমান মানবিক সংকট ও যুদ্ধবিরতির আলোচনা রক্ষায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

এই সময়ে উইটকফ এমন এক প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলে পৌঁছেছেন, যখন গাজায় ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ, খাদ্য ঘাটতি এবং মানবিক সহায়তা সরবরাহে বাধার কারণে আন্তর্জাতিক চাপ ক্রমেই বাড়ছে।

ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচার মাধ্যম 'কান' জানিয়েছে, মার্কিন দূত উইটকফ গাজায় একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র পরিদর্শনের পরিকল্পনাও করেছেন।

এদিকে, সম্প্রতি ইসরায়েল শিশুদের দুর্দশাগ্রস্ত ছবি প্রকাশের পর আন্তর্জাতিক নিন্দার মুখে পড়লে জানায়, তারা গাজার নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় প্রতিদিন ১০ ঘণ্টা করে সামরিক অভিযান বন্ধ রাখবে এবং মানবিক সহায়তা বহনকারী ট্রাকের জন্য নিরাপদ করিডোর নির্ধারণ করবে।

উইটকফ ইসরায়েল পৌঁছানোর পরপরই সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে এক পোস্টে বলেন, ‘গাজায় মানবিক সংকট অবসানের সবচেয়ে দ্রুত পথ হলো হামাসের আত্মসমর্পণ এবং জিম্মিদের মুক্তি।’

এই প্রেক্ষাপটে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ও প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) কিছু কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ—তারা মধ্যস্থতাকারী শান্তি উদ্যোগে বাধা সৃষ্টি করছে।

উল্লেখ্য, হামাসের প্রতিদ্বন্দ্বী ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এবং পিএলও আন্তর্জাতিক পরিসরে ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন হিসেবে স্বীকৃত। ফ্রান্স, ব্রিটেন ও কানাডা সম্প্রতি ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ইঙ্গিতও দিয়েছে।

তবে এই বিষয়ে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কার্টজ এবং বিচারমন্ত্রী ইয়ারিভ লেভিন পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলের সঙ্গে একীভূত করার পক্ষে প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছেন। অথচ এই ভূখণ্ডই ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের মূলভিত্তি হিসেবে বিবেচিত।

এদিকে কাতারে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার পরোক্ষ যুদ্ধবিরতির আলোচনা গত সপ্তাহে অচলাবস্থায় পড়ে। প্রধানত, ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার ও যুদ্ধোত্তর নিরাপত্তা বিষয়ক মতানৈক্য এতে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। উভয় পক্ষই আলোচনায় অগ্রগতি না হওয়ার জন্য একে অপরকে দায়ী করছে।

চলমান দুই বছরের যুদ্ধের মধ্যে এ পর্যন্ত গাজায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৬০ হাজার ছাড়িয়েছে। ফলে হামাসের ওপর যুদ্ধবিরতির জন্য আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে।

বর্তমানে হামাসের হাতে থাকা প্রায় ৫০ জন ইসরায়েলি জিম্মির মধ্যে আনুমানিক ২০ জন জীবিত আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের পরিবারের সদস্যরা নেতানিয়াহুর কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করে যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে আওয়াজ তুলেছেন।

ঢাকা এক্সপ্রেস/ইউকে

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন