ঢাকা, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫

২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ০৬ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

শিরোনাম

Scroll
ঢাকা এক্সপ্রেসের এডিটর ইন চিফ মোহাম্মদ সবুজ পারভেজের শ্বশুর ও পরিচালক সাবিহা সুরাইয়ার বাবা মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। তাঁর মৃত্যুতে ঢাকা এক্সপ্রেস পরিবার শোকাহত
Scroll
চিফ প্রসিকিউটর অফিসে গুমের অভিযোগ জমা দিলেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ
Scroll
রাজনৈতিক দলগুলোর মত অনুসারে হবে জুলাই সনদ: আলী রীয়াজ
Scroll
রাজধানীর খিলগাঁও ফ্লাইওভারের ঢালে বাসের ধাক্কায় কামরুল ইসলাম নামে পুলিশের একজন এসআই নিহত হয়েছেন
Scroll
আগামী ১ জুলাই থেকে চাকরিরত ও পেনশনভোগীরা পাবেন বিশেষ সুবিধা
Scroll
বৃষ্টি কমলেও পাহাড়ি ঢলে সিলেটে নদ-নদীর পানি বাড়ছে
Scroll
টাঙ্গাইলে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে মাইক্রোবাসের ধাক্কা, বাবা ও দুই ছেলে নিহত ৩
Scroll
মায়ের জানাজায় অংশ নিতে প্যারোলে মুক্তি চেয়েও পাননি সাবেক এমপি আসাদুজ্জামান আসাদ
Scroll
কারাখানার ছাদ থেকে লাফিয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, উত্তপ্ত গাজীপুর
Scroll
জি-৭ সম্মেলনে যোগ দিতে কানাডায় যাবেন না ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি
Scroll
পাকিস্তানের ১৭ বছর বয়সি টিকটকার সানা ইউসুফকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে

কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা পশু চিনবেন কীভাবে

লাইফস্টাইল ডেস্ক

প্রকাশ: ১৩:৩৪, ৩১ মে ২০২৫

কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা পশু চিনবেন কীভাবে

ছবি: সংগৃহীত

আর অল্প কিছুদিন পরই পবিত্র ঈদুল আজহা। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা কোরবানি করবেন নানা প্রকার গবাদিপশু। তবে এ উৎসব ঘিরে প্রতি বছরই এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিম উপায়ে গরু মোটাতাজাকরণে অসুস্থ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হন। অধিক লাভের আশায় তারা পশুর দেহে ক্ষতিকর ইনজেকশন প্রয়োগসহ আরো কিছু উপায় অবলম্বন করে গরুকে অস্বাভাবিকভাবে আকর্ষণীয় করে তোলেন। বাহ্যিকভাবে পশুটি স্বাস্থ্যবান দেখালেও আসলে তা মানুষের জন্য চরম স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব ইনজেকশনের কারণে পশুর শরীরে পানি জমে যায়, যা পরে মানুষের দেহে নানা রোগের কারণ হতে পারে। যেমন— হৃৎপিণ্ডে পানি জমা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস, কিডনি ও যকৃতের ক্ষতি, এমনকি হরমোন ভারসাম্যহীনতা।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন ও প্রাণী স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মো. বাহানুর রহমান কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা গরু চেনার কয়েকটি উপসর্গ তুলে ধরেছেন। এর মাঝে রয়েছে, নাক থাকবে শুকনো, যা গরুর অসুস্থতার একটি প্রাথমিক লক্ষণ। দেহে পানির পরিমাণ বেশি থাকায় গরুর দেহ হবে থলথলে। অস্বাভাবিক হারে হাঁপাবে বা ঘন ঘন শ্বাস নেবে; সহজে ক্লান্ত হয়ে পড়বে। শরীরের তাপমাত্রা থাকবে অস্বাভাবিকভাবে বেশি এবং গরুটি সাধারণত খাবার খেতে চাইবে না। মুখে অতিরিক্ত লালা ঝরতে পারে, যা কখনো ফেনাযুক্ত, আবার কখনো ফেনাহীন। নিয়মিত জাবর কাটবে না, যা সুস্থ গরুর ক্ষেত্রে স্বাভাবিক। শরীরের বিভিন্ন স্থানে মাংস অসমভাবে জমে থাকতে পারে। আঙুল দিয়ে চাপ দিলে সেই স্থানে গর্ত হয়ে যাবে এবং অনেকক্ষণ পর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে। রানের মাংস হবে অস্বাভাবিকভাবে নরম এবং হাড় তুলনামূলকভাবে নরম ও নমনীয় থাকবে। এই গরুগুলো সাধারণত বেশি সময় এক জায়গায় বসে থাকে, হাঁটতে বা দাঁড়াতে অনাগ্রহ প্রকাশ করে। তাই হাটে পশু কিনতে গেলে গরুকে চালিয়ে বা হাঁটিয়ে দেখতে হবে, এতে তার স্বাস্থ্যের প্রকৃত অবস্থা বোঝা যায়।

অধ্যাপক বাহানুর রহমান জানিয়েছেন, সুস্থ গরু চেনার কিছু গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ আছে। এর মাঝে রয়েছে, গরুর নাকের উপরিভাগ থাকবে ভেজা এবং ঠান্ডা অনুভব হবে। চামড়ায় কোনো দাগ থাকবে না এবং স্পর্শ করলে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখা যাবে। চঞ্চল আচরণ করবে এবং খাদ্য দেখলেই আগ্রহ প্রকাশ করবে। মুখে অতিরিক্ত লালা বা ফেনা থাকবে না। নিয়মিত জাবর কাটবে, দৃষ্টিতে থাকবে চকচকে ভাব। কুঁজ হবে উচ্চ এবং সুগঠিত, চামড়া হবে টানটান ও সতেজ এবং শরীরে আঙুলের চাপ দিলে অল্পই দেবে যাবে এবং দ্রুত আগের অবস্থায় ফিরে আসবে।

তিনি আরো বলেন, দীর্ঘ পথ হেঁটে আসার কারণে সুস্থ গরুর শরীরেও সাময়িকভাবে তাপমাত্রা বাড়তে পারে, তবে সেটি এক থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যে স্বাভাবিক হয়ে যায়।

হাটে তাপমাত্রা মাপার সুযোগ না থাকায় অধ্যাপক বাহানুর একটি কার্যকর বিকল্প উপায়ও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গরুর কানের গোড়ায় হাত দিয়ে তাপমাত্রা পরীক্ষা করা যায়। যদি স্থানটি অতিরিক্ত গরম মনে হয়, তবে বুঝতে হবে গরুটি অসুস্থ। একইভাবে, নাকের উপরিভাগ শুকনো হলে সেটিও অসুস্থতার ইঙ্গিত।

অধ্যাপক বাহানুর রহমান জানান, অনেক খামারি হাতুড়ে চিকিৎসকদের (কোয়াক) প্ররোচনায় পড়ে ডেক্সামিথাসন ও প্রেডনিসোলনের মতো স্টেরয়েড জাতীয় ইনজেকশন প্রয়োগ করেন, যা পশুর শরীরকে কৃত্রিমভাবে ফুলিয়ে তোলে। এতে পশুর যকৃৎ, কিডনি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং পশুটি দ্রুত মৃত্যুর দিকে ধাবিত হয়।

তিনি বলেন, প্রাকৃতিক উপায়ে পশু মোটাতাজাকরণই উত্তম। নিয়মিত খাবার, পরিচ্ছন্ন পরিবেশ এবং পরিমিত যত্নই একটি গরুকে স্বাস্থ্যবান করে তুলতে পারে। খামারিদের উচিত উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের পরামর্শ নেওয়া।

কোরবানির পশু কেনার সময় ধর্মপ্রাণ ক্রেতাদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ, শুধু বাহ্যিক আকর্ষণ দেখে নয়, বরং পশুটির আচরণ, চলাফেরা, খাওয়ার আগ্রহ ও নাকের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সামান্য অসতর্কতা আপনার পরিবার ও সমাজের জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি ডেকে আনতে পারে।

ঢাকা এক্সপ্রেস/আরইউ

আরও পড়ুন