ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

১৯ আষাঢ় ১৪৩২, ০৭ মুহররম ১৪৪৭

শিরোনাম

Scroll
ইতালির নাগরিক তাবেলা সিজার হত্যা মামলার রায় আজ
Scroll
বান্দরবানের রুমায় দুর্গম পাহাড়ে সেনাবাহিনীর অভিযানে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের কমান্ডারসহ দুই সদস্য নিহত
Scroll
সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয় গ্রেপ্তার
Scroll
চট্টগ্রামের পটিয়া থানার ওসি আবু জায়েদ মো. নাজমুন নূরকে প্রত্যাহার করা হয়েছে
Scroll
মৌলভীবাজারের বড়লেখা সীমান্ত দিয়ে আরো ৪৮ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ
Scroll
কুমিল্লার মুরাদনগরে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে একই পরিবারের তিনজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা
Scroll
পদত্যাগপত্র জমা দিলেন শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা পরিচালক চিত্রশিল্পী ও শিল্প সমালোচক মোস্তফা জামান
Scroll
ইন্দোনেশিয়ার বালিতে ৬৫ যাত্রী নিয়ে ফেরিডুবি, নিখোঁজ ৪৩

ভোটের অঙ্কে জোট নয়, সমঝোতার ভিত্তিতে এগোচ্ছে তিন বিরোধী শক্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২:০৭, ২৭ জুন ২০২৫

ভোটের অঙ্কে জোট নয়, সমঝোতার ভিত্তিতে এগোচ্ছে তিন বিরোধী শক্তি

ছবি: সংগৃহীত

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নেবে না—এমন অনুমানকে কেন্দ্র করে রাজনীতিতে শুরু হয়েছে নতুন মেরুকরণের প্রক্রিয়া। বিএনপিকে পাশ কাটিয়ে তিনটি ভিন্ন রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে এক ধরনের ‘বৃহত্তর নির্বাচনী সমঝোতা’ গঠনের চেষ্টা চলছে। এই উদ্যোগে নেতৃত্ব দিচ্ছে এক সময়ের ছাত্র ও জনতার অভ্যুত্থানে সক্রিয় দলগুলো, যারা আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে নির্বাচনে আলাদা করে নিজেদের শক্তি দেখাতে প্রস্তুত হচ্ছে।

সমঝোতার কাঠামো হিসেবে জামায়াতে ইসলামী বিএনপির মতো আলাদাভাবে নির্বাচন করবে। অন্যদিকে, চরমোনাই পীরের ইসলামী আন্দোলনকে সামনে রেখে একাধিক ধর্মভিত্তিক দল একটি আলাদা প্ল্যাটফর্ম গড়ার চেষ্টা করছে। আর বিএনপির সংস্কার আলোচনার বিপরীতে অবস্থান নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ে একটি তৃতীয় শক্তি গড়ার দায়িত্ব নিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

এই তিন শক্তির মধ্যে আনুষ্ঠানিক কোনো জোট গঠনের পরিকল্পনা নেই। তবে তারা নিজেদের মধ্যে আসন ভাগাভাগির মাধ্যমে পারস্পরিক সমর্থন নিশ্চিত করতে চায়। জামায়াত, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, জমিয়ত, এবি পার্টি, খেলাফত মজলিস ও গণঅধিকার পরিষদের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এই চিত্র পাওয়া গেছে। জানা গেছে, যুগপৎ আন্দোলনে বিএনপির পাশে থাকা কিছু দলও এই সমঝোতায় আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এ দলগুলোর একাংশ বর্তমানে সাংবিধানিক সংস্কারের প্রশ্নে অনেকটাই একমত। তাদের প্রস্তাবে রয়েছে সংখ্যানুপাতিক ভিত্তিতে উচ্চকক্ষে আসন বণ্টন, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠন, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা হ্রাস এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনার দাবি। এ ছাড়াও রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নির্ধারণের মতো স্পর্শকাতর প্রস্তাব।

এই প্রক্রিয়ায় বিএনপির অনড় অবস্থান অনেক দলকে তাদের থেকে দূরে সরিয়ে এই তিন বলয়ের কাছাকাছি এনেছে। এনসিপি, জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের নেতারা মনে করেন, বর্তমানে ভোটের অঙ্কে বিএনপির একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা কঠিন। কারণ, আওয়ামী লীগ নির্বাচনে না থাকলে ‘আওয়ামীবিরোধী’ ভোট ছিটকে পড়বে ভিন্ন ভিন্ন দলে।

ইতোমধ্যেই ইসলামী আন্দোলন ঘোষণা দিয়েছে, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনসহ মৌলিক সংস্কারের দাবিতে তারা আগামীকাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করবে। এ সমাবেশে জামায়াত, এনসিপি ও অন্যান্য দলকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও বিএনপিকে রাখা হয়নি।

সমাবেশ প্রসঙ্গে ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব ইউনূস আহমদ বলেছেন, ‘ইসলামী দল হলেই হবে না, যেকোনো ব্যক্তি বা দল যদি ইসলাম, দেশ ও মানবতার কল্যাণে কাজ করতে চায়—তাদের জন্য আমাদের দরজা খোলা।’

একাধিক রাজনৈতিক সূত্র জানায়, বৃহত্তর নির্বাচনী সমঝোতার পরিকল্পনায় সংশ্লিষ্ট একটি সরকারঘনিষ্ঠ দলের একজন শীর্ষ নেতা মন্তব্য করেছেন—এই নির্বাচনে বিএনপি এককভাবে ‘আওয়ামীবিরোধী’ ভোট ঘরে তুলতে পারবে না। আগে বিএনপি ছিল নৌকার বিরুদ্ধে ভোটারদের ভরসা, কিন্তু এখন সেই ভোট বিভক্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রবল।

তাঁর মতে, আওয়ামী লীগ নির্বাচনে থাকলে এসব দল বিএনপির নেতৃত্ব মেনে চলত। কিন্তু আওয়ামী লীগ না থাকায় তারা নিজেদের অবস্থান অনুযায়ী ভোট ভাগাভাগি করতে চাচ্ছে। ফলে তৈরি হচ্ছে এক ধরনের ‘বিএনপিবিরোধী বিরোধী জোট’।

ঢাকা এক্সপ্রেস/ বিডি

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন