ঢাকা, শনিবার, ০৯ আগস্ট ২০২৫

২৫ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৪ সফর ১৪৪৭

শিরোনাম

Scroll
সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রত্যাশার বাংলাদেশ গড়া তোলা সম্ভব বলে মনে করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান
Scroll
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী, বললেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
Scroll
আসন্ন নির্বাচনে কারো পক্ষে বা বিপক্ষে কাজ করব না: সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন
Scroll
ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে মধ্যরাতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে উত্তাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
Scroll
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের হল কমিটি দেওয়ার পর ২৪ ঘণ্টা না যেতেই ছয়জনকে অব্যাহতি
Scroll
গাজীপুরে সাংবাদিক মো. আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যা মামলায় আরো তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ
Scroll
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ১৫ আগস্ট রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন

‘ফ্যাটম্যান’ হামলার ৮০ বছর

পরমাণু যুদ্ধ নিয়ে সতর্ক করলেন নাগাসাকির মেয়র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৩:৫০, ৯ আগস্ট ২০২৫

পরমাণু যুদ্ধ নিয়ে সতর্ক করলেন নাগাসাকির মেয়র

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের চালানো পারমাণবিক বোমা হামলার ৮০তম বার্ষিকীতে জাপানের নাগাসাকির মেয়র শিরো সুজুকি বিশ্বজুড়ে চলমান যুদ্ধ ও সংঘাত অবসানে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

১৯৪৫ সালের ৯ আগস্টের ওই পারমাণবিক বোমা নাগাসাকিকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছিল, প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল আনুমানিক ৭৪ হাজার মানুষের।

তার তিনদিন আগে ৬ আগস্ট আরেকটি পারমাণবিক বোমায় যুক্তরাষ্ট্র জাপানের হিরোশিমাকেও নরককুণ্ডে পরিণত করেছিল। নারকীয় এ হামলাগুলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি দ্রুততর করতে ভূমিকা রেখেছিল বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন।

শান্তি ঘোষণায় নাগাসাকির মেয়র শিরো সুজুকি বলেন, সংঘাত আর বিভাজনের এক নিষ্ঠুর চক্রে বিশ্বজুড়ে দ্বন্দ্বগুলো তীব্রতর হচ্ছে। আমরা যদি এই পথেই চলতে থাকি তাহলে শেষ পর্যন্ত নিজেদেরকে পারমাণবিক যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়া হবে।

নাগাসাকিতে ওই হামলায় তাৎক্ষণিকভাবে বিপুল সংখ্যক প্রাণহানি যেমন হয়েছিল, তেমনি পরে বোমার তেজস্ক্রিয়তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় লাখ লাখ মানুষ লিউকেমিয়াসহ নানা গুরুতর রোগে আক্রান্ত হয়েও মারা পড়েছিল।

হিরোশিমায় মার্কিন পারমাণবিক বোমায় আনুমানিক ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।

তবে নাগাসাকির বোমাটি ছিল হিরোশিমার চেয়ে বড় ও বেশি শক্তিশালী, যার প্রভাবে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে অসংখ্য এলাকা নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল।

পরে শহরটি নতুন করে গড়া হয়, সেখানেই এক মিনিট নীরবতায় শুরু হয় আট দশক আগের নারকীয় ঘটনার স্মরণ।

বিশ্বকে শান্তির বার্তা দিতে পারমাণবিক হামলার পর প্রথমবার একসঙ্গে বেজে উঠে নাগাসাকির যমজ ক্যাথেড্রালের ঘণ্টাও।

শনিবারের এ অনুষ্ঠানে ছিল প্রতীকী ‘জল নিবেদন’ও, ৮০ বছর আগে বোমার বিস্ফোরণে যাদের চামড়া পুড়ে যাচ্ছিল, তারা পানির জন্য কাতর হয়ে পড়েছিল। তাদের স্মরণে হামলায় বেঁচে যাওয়াদের একজনসহ বিভিন্ন প্রজন্মের প্রতিনিধিরা ‘জল নিবেদন’ করেন।

নাগাসাকির এ স্মরণ অনুষ্ঠানে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা এবং কয়েক ডজন দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

অনুষ্ঠানে জাপানের মেয়র বলেন, ১৯৪৫ সালের ৯ আগস্ট একটি আনবিক বোমা এই শহরের উপর পড়েছিল। এখন, সেই দিনের ৮০ বছর পর আজ, কে ভেবেছে আমাদের বিশ্ব এরকম হয়ে পড়বে? শক্তির মুখোমুখি শক্তি এমন বিবাদগুলো অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে, বলেছেন সুজুকি।

নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা হামলার দিন বিস্ফোরণস্থল থেকে তিন কিলোমিটার দূরে ছিলেন হিরোশি নিশিওকা। স্মরণ অনুষ্ঠানে তিনি সেদিনের ভয়াবহতার কথা তুলে ধরেন।

৯৩ বছর বয়সী নিশিওকা বলেন, এমনকি ভাগ্যবানদেরও (যারা বোমায় গুরুতর আহত হয়নি) দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত পড়তে শুরু করে, চুল ঝরতে থাকে এবং তারা একে একে মারা যাচ্ছিলেন। যদিও যুদ্ধ শেষ হয়ে গিয়েছিল, তারপরও ওই আনবিক বোমা অদৃশ্য সন্ত্রাস নিয়ে এসেছিল।

নাগাসাকির ৫০ বছর বয়সী বাসিন্দা আতসুকো হিগুচি জানান, শহর যে বোমায় হতাহতদের স্মরণ করছে তা ‘দেখে তিনি খুশি’। তিনি বলেন, এগুলো অতীত হয়েছে, এমনটা ভাবার বদলে আমাদের স্মরণে রাখতে হবে, এমন ঘটনা বাস্তবেই ঘটেছিল।

‘নিরাপত্তা উদ্বেগজনিত’ কারণে গত বছর এই স্মরণ অনুষ্ঠানে নাগাসাকি ইসরায়েলকে আমন্ত্রণ জানায়নি, তা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়েছিল।

এ বছরের আয়োজনে ইসরায়েল, রাশিয়া ও বেলারুশকেও আমন্ত্রণ জানানো হয় বলে জানান মেয়র সুজুকি। ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়া ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরুর পর থেকে এ ধরনের অনুষ্ঠানে মস্কো ও মিনস্ককে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা এড়িয়েই চলতো।

পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধ করে হওয়া আন্তর্জাতিক চুক্তি ট্রিটি অন দ্য প্রোহিবিশন অব নিউক্লিয়ার উইপনস ২০২১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয়েছে। ৭০টির বেশি দেশ এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করলেও পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলো এর বিরোধিতা করে আসছে। তারা এ ধরনের অস্ত্রকে প্রতিপক্ষের হামলা প্রতিরোধে শক্তিশালী বর্ম মনে করে।

এমনকি জাপানও এ নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে। মার্কিন পারমাণবিক অস্ত্রই তাদের নিরাপত্তা জোরদার হয়েছে, বলছে তারা।

ঢাকা এক্সপ্রেস/আরইউ

আরও পড়ুন